Sunday 3 July 2016

"রেললাইনের রাত"
-শুভ্র নীল



বছর দুই আগের কথা। হঠাৎ বাড়ি থেকে ফোন আসলো ঠাকুমার খুব শরীর খারাপ, একবার দেখতে চায় আমাকে। পরীক্ষা সামনে এগিয়ে এসেছে, দিন দশেক মত বাকি আর। এমতাবস্থায় বাড়ি যাওয়া যাবেনা বলে দিলাম। কিন্তু মনটা খুব খারাপ হয়ে গেল। ঠাকুমা ছোটবেলা থেকেই খুব ভালোবাসে আমাকে। রাত জেগে পড়াশোনা করে নিয়ে পরেরদিন খুব তাড়াতাড়ি গেলাম কলেজ। কিছু দরকারি কাজ ছিল, সেগুলো শেষ করে দুপুর দুটো নাগাদ বেরিয়ে পড়লা
ম মেস থেকে। মোটামুটি সাত ঘণ্টা লাগে আমার বাড়ি যেতে, রাত ৯টার মধ্যেই পৌঁছে যাবো। জুনের শুরু সবে। বর্ষা আসেনি, তবে মাঝেমাঝেই বিকেলের বা সন্ধ্যের দিকে ঝড়বৃষ্টি নামে। ব্যাগে ছাতা আর রেনকোট আছে যদিও। হাওড়া পৌঁছতে পৌঁছতে চারটে হয়ে গেল। ৪টে ২০-র মেদিনীপুর লোকাল টা গ্যালোপিং,উঠে পড়লাম। সাঁতরাগাছি তে গিয়ে দেখি দীঘা লোকাল দাঁড়িয়ে আছে। রাতে ঘুম হয়নি ঠিক করে। ভাবলাম দীঘা লোকালে করে আমার শেষ ষ্টেশনে যেতে কম করেও তিন ঘণ্টা লাগবে এখন। টানা একটা ঘুম দেওয়া যাবে ভেবে মেদিনীপুর লোকাল থেকে নেমে উঠে বসলাম দীঘা লোকালের শেষ কামরার জানলার পাশের একটা সিটে। ট্রেনে বেশি ভিড় নেই এখন, মেচেদা থেকে এই ট্রেনটায় ভিড় হয়। যাইহোক, আমি যাবো হেঁড়িয়া। বেশি কিছু না ভেবে জানলার রডে মাথা ঠেকিয়ে চোখ বুজে দিলাম।
নিদ্রাদেবী কখন যে আমার উপর নেমে এসেছিলেন জানিনা। হঠাৎ লোকজনের ঠেলাঠেলির শব্দ, আর চীৎকার চেঁচামিচিতে ঘুম ভেঙে গেল। দেখলাম ট্রেনের কামরা প্রায় ভর্তি। বাইরে তাকিয়ে দেখলাম এখন পাঁশকুড়া। মানে মাঝখানে মেচেদাতেও লোক উঠেছে অনেক, কিন্তু আমার ঘুম ভাঙেনি। হাতঘড়িতে দেখলাম ৬টা ৪০ বাজে। মানে প্রায় দুঘণ্টা ঘুমিয়েছি আমি! গায়ের জামাটা ভিজে ভিজে লাগলো যেন। বাইরে টিপটিপ বৃষ্টি পড়ছে। জানলা দিয়ে বৃষ্টির ছাঁট ল্গেছে এতক্ষণ ধরে, তাই জামাটা ভেজা। হেঁড়িয়া পৌঁছতে আরও এক-দেড় ঘণ্টা লাগবেই। হঠাৎ বাইরে তুমুল বৃষ্টি শুরু হলো, সাথে বেশ ভালোই ঝোড়ো হাওয়া। হেঁড়িয়া ষ্টেশন থেকে আরও কুড়ি কিলোমিটার ভেতরে গ্রামে আমার বাড়ি। ষ্টেশন থেকে বেরিয়ে বাসে করে দশ কিমি যাওয়ার পর বাকি দশ কিমি সাইকেলে বা আলাদা কোনওভাবে যেতে হয়, বাস বা অন্য কোনো রুটের গাড়ি চলেনা সেদিকে। কিন্তু এখন মাথায় এল যে ষ্টেশন থেকেই বাস পাবো তো এই ঝড়জলের মধ্যে! যা হয় দেখা যাবে। ট্রেন ছেড়েছে, কিন্তু ঝড়বৃষ্টির মধ্যে হেলতেদুলতে চলেছে যেন। হেঁড়িয়া পৌঁছতে পৌঁছতে ৯টা ২০ হয়ে গেল। অনেকেই নামলো ওখানে। কিন্তু তার সব কাছেরই লোক। হেঁটেই চলে যাবে তাদের বাড়ি। দুরের বলতে আমি একা শুধু! সবাই চলে গেল, আমি জনমানবশূন্য মাঠের মাঝখানে স্টেশনের খোলা প্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে দেখছি বাস আসছে কিনা। এখনও বেশ টিপটিপ বৃষ্টি পড়ছে। এরকম বেশ মিনিট পনেরো ধরে অপেক্ষা করে যখন দেখলাম যে বাস আর আসছেনা, বাধ্য হয়ে প্ল্যাটফর্মের নিচে টিকিট কাউন্টারে নেমে এলাম। দেখলাম টিকিট কাউন্টারের ভেতরে স্টেশনমাস্টার রাতের খাওয়াদাওয়া সেরে বিছানা করে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আমি জিজ্ঞেস করে জানলাম, ৯টা১০ এর বাস টা চলে গেছে, এরপর লাস্ট বাস আসতে ১১টা ৩০। এখানে কাছাকাছি থাকার মত কোনও জায়গা নেই। গ্রাম বেশ খানিকটা দূরে, আর হোটেলে থাকতে গেলেও সেই এক কিলোমিটার হেঁটে বাসস্ট্যান্ডে যেতে হবে। মাথায় যেন বাজ পড়লো আমার। ওইসময় বাস ধরে বাড়ি ফেরা একেবারে অসম্ভব, সাথে থাকার জায়গাও মিল্বেনা এখন। তাঁকে বললাম আমার সমস্যার কথা। সব শুনে তিনি ঘেরা টিকিট কাউন্টারের বেঞ্চে রাত কাটানোর অনুমতি দিলেন আমাকে। ব্যাগে কয়েকটা বিস্কুটের প্যাকেট আছে। বেশিরভাগ রাস্তা ঘুমিয়ে আসার জন্য বোতলের জলও আছে অনেকটা। আপাতত এইগুলো দিয়েই রাত কাটাতে হবে। সকালের প্রথম বাস ধরেই যাবো। কালকের দিনটা বাড়িতে থেকে পরশু আবার ফিরে যাবো মেসে। যাইহোক, বিস্কুট জল খেয়ে ভাবলাম শুয়ে পড়ি। কিন্তু পাশের ডোবার ব্যাঙেদের চীৎকার আর মশাদের উপদ্রবে ঘুম আসা একপ্রকার অসম্ভভ হয়ে উঠলো। মোবাইলের চার্জও শেষ প্রায়। বাড়িতে ফোন করে জানিয়ে দিয়েছি সকালে বাড়ি আসবো। কি করা যায় এখন! টর্চটা হাতে নিয়ে বাইরে বেরিয়ে এলাম। বৃষ্টি কমে গেছে। আকাশের মেঘও যেন বেশ খানিকটা পাতলা হয়ে হালকা আলোর আভা দিচ্ছে। ভাবলাম, রেললাইন ধরে বেশ খানিকটা হেঁটে আসি। রাতের রেললাইন ধরে হাঁটার ইচ্ছে অনেকদিনের ছিল, আজ পূরণ হয়ে যাবে অপ্রত্যাশিতভাবে। নেমে পড়লাম রেললাইনে। হাঁটতে বেশ ভালোই লাগছে। আকাশে মেঘ তারাদের লুকোচুরি দেখছি কখনও লাইনের পাতে বসে, কখনও গুনগুন করতে করতে হেঁটে চলেছি... অনেকটা এসে গেলাম হাঁটতে হাঁটতে। হাতঘড়িতে দেখলাম ১২টা বেজে গেছে, প্রায় একঘণ্টা ধরে হেঁটেছি! ফেরার পালা এবার। আনমনে ফিরে চলেছি আবছা অন্ধকারের বুক চিরে, ক্লান্ত লাগছে নিজেকে খুব। হালকা ঘুম ঘুম ভাব আসছে ঠাণ্ডা হাওয়ায়। হঠাৎ করে আবার টিপটিপ বৃষ্টি পড়া শুরু হল। ইস, সামনেই পরীক্ষা, এখন একবার যদি জ্বরে পড়ি পরীক্ষাটাই বরবাদ যাবে পুরো। জোর কদমে পা চালালাম এবার। আসার সময় একঘণ্টার পথ এখন আধঘণ্টাতেই পৌঁছে যাওয়ার কথা, কেননা তখন এসেছি হেলতেদুলতে।
হঠাৎ, দাদাভাই?
চমকে উঠলাম, গায়ের সব রোম খাড়া হয়ে উঠলো। কে?
-দাদাভাই? চিনতে পারছোনা দাদাভাই?... একটা মেয়ের গলার আওয়াজ পেলাম।
-কে তুমি? কোথায়? কাউকেই তো দেখতে পাচ্ছিনা এখানে। হাতের টর্চটা জ্বালানোর চেষ্টা করি, চড়চাপড় দিয়েও দপদপ করে শুধু, বেশি কিছু হয়না।
-এইতো দাদাভাই তোমার পিছনেই আমি।
পেছন ঘুরে আবছা অন্ধকারে দেখলাম একটা অল্পবয়সী মেয়ে আমার পাশেই দাঁড়িয়ে। অন্ধকারে ঠিক বোঝা যায়না, তবে পনেরো-ষোলো বয়স হবে আন্দাজ।
-কে তুমি? এত রাতে এখানে কি করছো? আমাকেই বা ডাকছো কেন? কিছু পাগল থাকে এমন। তাই একটু রুঢ়স্বরেই বললাম।
-চিনতে পারছোনা দাদাভাই? আমি সাবিনা...
-সাবিনা! কোন সাবিনা? কি করো তুমি? তোমার বাড়ি কোথায়?
-বাড়ি নেই আমার, তাড়িয়ে দিয়েছে আমায়... আমায় বাঁচাও দাদাভাই। ওরা মেরে ফেলবে আমায়...
এই দুর্যোগের রাতে একজন মেয়ে নিজেকে অসহায় হিসেবে পরিচয় দিয়ে আমাকে দাদাভাই বলে বাঁচাতে বলছে... আর নিজেকে কঠোর করে রাখা যায়না। ভাবলাম মেয়েটি কোনওভাবে বিপদে পড়েছে। তাই আমাকে দাদা হিসেবে মনে করে আশ্রয়স্থল খুঁজছে। বদবুদ্ধিও থাকতে পারে। যাইহোক, সকাল পর্যন্ত এর সাথেই কথা বলে কাটিয়ে দেওয়া যাবে। সেটা মেয়েটির একরাতের দাদা হওয়ার সুবাদেও যেমন, তেমন আমারও এখন জেগে থাকা ছাড়া কাজ নেই সকাল পর্যন্ত। তারপর সকাল হলেই মেয়েটিকে স্টেশনমাস্টারের হেফাজতে দিয়ে চলে যাবো।
হঠাৎ, ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্নার আওয়াজ পেলাম। কি ভাবছো দাদাভাই? সকাল হলেই আমাকে ছেড়ে চলে যাবে আমার অসহায়তায় ফেলে রেখে? আমি তোমার ক্ষতি করতে আসিনি দাদাভাই...
চমকে উঠলাম, শিরদাঁড়া দিয়ে একটা ঠাণ্ডা স্রোত বয়ে গেল যেন। আমি সকালে ওকে স্টেশনমাস্টারের হেফাজতে রেখে চলে যাবো এটা তো আমার মন ছাড়া এখন কেউ জানার কথা নয়, এই অপরিচিতা বোন জানলো কি করে! ঢোঁক গিলে আমতা আমতা করে বললাম, না তা নয় ঠিক। আগে শুনিতো তোমার সমস্যাটা কি? দাদাভাই বললেও সে আমার অপরিচিতা বোন, তারউপর একটা অস্বাভাবিক কিছু যে ঘটে চলেছে আমার চারপাশে বেশ ভালোই টের পাচ্ছে আমার ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়। তাই তুই টা বেরালোনা মুখ দিয়ে। হঠাৎ খেয়াল করলাম বৃষ্টি বন্ধ হয়ে গেছে।
-কি হল দাদাভাই, চুপ করে কি ভাবছো?
-না, মানে চল হাঁটতে হাঁটতে তোমার সমস্যাটা কি শুনি।
-আমি প্রলয় কে ভালোবাসি দাদাভাই। আমার আব্বু, আম্মু জেনে গেছে সেটা। তাই আমার বিয়ে ঠিক করেছে বাড়িতে সবাই মিলে। আমি বিয়ে করবোনা বলায় চাচু খুব মেরেছে আমায়। এই দেখো হাতে খুব ব্যথা।
অন্ধকারেও যেন আলোকিত হয়ে উঠেছে সাবিনার হাতের ফোলা জায়গাটা! ভারী কিছুর আঘাতে যেমন ফুলে যায় তেমন...
-আমি পড়তে চাই দাদাভাই। অনেকদূর পর্যন্ত পড়তে চাই। আর বিয়ে করলেও প্রলয়কেই করবো।
এই ঠাণ্ডা হাওয়ার মাঝেই আই দরদর করে ঘামছি এই কয়েক মুহূর্তের ঘটে চলা ঘটনাপ্রবাহে। কাঁপা কাঁপা গলায় জিজ্ঞেস করলাম এই প্রলয় টা কে?
-প্রলয় আমার সাথেই একই ক্লাসে পড়ে দাদাভাই। প্রলয় হিন্দু, আর আমি মুসলিম, তাই মেনে নেয়নি বাড়ি থেকে, বিয়ে ঠিক করেছে। আজ বিয়ে থেকে পালিয়ে এসেছি আমি...
হঠাৎ কিছু শোরগোলের আওয়াজ ভেসে আসে দূর থেকে। কয়েকটা আলোর রেখা দেখা যাচ্ছে দুরের গ্রামের দিক থেকে রেললাইনের দিকেই এগিয়ে আসছে। সেদিকে তাকিয়ে সাবিনা বলে ওঠে, “ওই ওরা আমায় খুঁজতে বেরিয়েছে দাদাভাই। ধরতে পারলে মেরে ফেলবে আমায়। বাঁচাও আমায় দাদাভাই...”
এই অচেনা জায়গায়, এরকম অবস্থায় ঠিক কি করা উচিত আমার মাথায় আসলোনা। শুধু বললাম চলো।
লাইন ধরে দৌড়োতে শুরু করেছি প্রায়। সাবিনা শক্ত করে আমার হাত ধরে রেখেছে... কি ভীষণ শীতল সে হাত! লাইনের পাতের উপর একটা হালকা আলোর আভা পড়তে সামনে তাকিয়ে দেখলাম, একটা ট্রেন আসছে। সাবিনা হঠাৎ আমার হাত ছেড়ে জোরে দৌড়োতে শুরু করলো... ট্রেন প্রায় সামনেই এসে গেছে... চীৎকার করে আমিও দৌড়োচ্ছি তার পেছনে... সরে যাও সাবিনা, সরে যাও লাইন ছেড়ে। হঠাৎ কে যেন আমায় ধরে ছুঁড়ে ফেললো রেললাইনের ধারে। ট্রেন টা সাবিনাকে ধাক্কা দিয়েছে... একি! একি দেখছি আমি! ভয়ে সারা শরীরের রক্ত হিম হয়ে গেলো আমার... ট্রেনটা সাবিনাকে ভেদ করেই এগিয়ে চলেছে, আর হাসিমুখে সাবিনা আমার দিকে তাকিয়ে আছে... কিন্তু সে হাসিতে যেন আগুন আছে। প্রবল আক্রোশে যেন সাবিনার মুখ লাল হয়ে উঠেছে, দুচোখ যেন জ্বলছে তার... আমি আর নিজেকে সামলাতে পারছিনা... দুচোখে অন্ধকার নেমে আসছে আমার... “ভালো থেকো দাদাভাই, খুব ভালো থেকো...” সব অন্ধকার তারপর...
জ্ঞান ফিরতেই যেন মনে হল সামনে কেউ এগিয়ে চলেছে রেললাইন ধরে, ট্রেন টা এগিয়ে আসছে... সরে যা সাবিনা লাইন ছেড়ে, সরে যা... লাফিয়ে উঠে বসেছি আমি। ডাক্তার কাছেই ছিলেন, দৌড়ে এলেন। নার্স এসে শুইয়ে দিল আমাকে। শরীরে একটুও শক্তি নেই, নিজের গায়েই নিজে ছ্যাঁকা খাচ্ছি... জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে। বিকেলের দিকে ভালো করে জ্ঞান ফিরলো আমার। ডাক্তার বললেন, কাল তোমাকে ছেড়ে দেবো। আজ একটু বিশ্রাম চাই তোমার। এতক্ষণে বুঝলাম আমি এখন হাসপাতালে আছি। আমায় এখানে কে এনেছে ডাক্তারবাবু?
-স্টেশনমাস্টার ভোরে মর্নিং ওয়াকে বেরিয়ে রেললাইনের ধারে পড়ে থাকতে দেখে তোমাকে। দেখে মনে হয় লাইন থেকে পড়ে গেছিলে। ভাগ্যভালো ছিল তাই লাইনের মাঝে পড়নি। তিনিই এখানে ভর্তি করে দিয়ে গেছেন তোমাকে। সুইসাইডাল কেস নয় বলেই মনে হয়েছে, তাই পুলিশকে জানানো হয়নি। আর উনি কাল রাতে তোমাকে দেখেছেন ট্রেন থেকে নামতে, থাকতেও দিয়েছিলেন টিকিটঘরে। কাল তোমাকে ছেড়ে দেওয়া হবে হাসপাতাল থেকে।
-আমার ব্যাগ ডাক্তারবাবু?
-ওটা তোমাকে স্টেশনমাস্টারের হেফাজত থেকে নিয়ে নিতে হবে। তোমার কাছে একটা টর্চ পড়ে ছিল, ওটাও ওনার কাছে আছে।
পরেরদিন সকাল ১০টায় আমার ছুটি হল হাসপাতাল থেকে। স্টেশনমাস্টারের কাছ থেকে ব্যাগ নিয়ে বাড়ি ফেরার বাস ধরলাম। বাবার নিশ্চয়ই অফিস আছে আজ, সাইকেল নিয়ে আনতে আসতে পারবেনা। বাস থেকে নেমে হেঁটেই চলে যাবো বাড়ি।
দুপুর ১২টার দিকে বাড়ি পৌঁছলাম। দেখলাম, বাবার সাইকেল টা বাইরে দাঁড় করানো। তার মানে আজ অফিস যায়নি বাবা। আমাকে দেখেই মা দুয়ারে বেরিয়ে এল, “কিরে, কি হল? আবার ফিরে এলি কেন? পরীক্ষা যে সামনে?”
-আমি! ফিরে এলাম মানে?
-আরে তোর বাবা তো তোকে এই বাসে তুলে দিয়ে ফিরে এল, এখনও সাইকেল বাইরে দাঁড় করানো। অফিস যাবে বেরোচ্ছে এবার। মায়ের কথা শুনে বাবাও বাইরে বেরিয়ে এসেছে। -একি! তোর চোখ এমন ঘোলাটে হয়ে আসছে কেন? বাবু? কি হলো তোর?...
আমার দুচোখে অন্ধকার নেমে আসছে...
 ফেসবুকে পড়ুন

No comments:

Post a Comment

মনের কথা-Moner Katha